(ক) সংস্কৃতানুবাদ
বাংলা, ইংরেজি প্রভৃতি ভাষা থেকে সংস্কৃত ভাষায় রূপান্তর করার নাম সংস্কৃতানুবাদ।
সংস্কৃতানুবাদের সাধারণ নিয়ম
সাধারণত বাংলায় শব্দের সঙ্গে যে-বিভক্তি যুক্ত থাকে এবং পদটি যে বচনের হয়, সংস্কৃতে অনুবাদ
করার সময় সে-বচন ও সে-বিভক্তি প্রয়োগ করতে হয়। যেমন-
একজন মানুষ- নরঃ। দুজন মানুষ নরৌ। মানুষেরা- নরাঃ ।
বালকের- বালকসা। ছাত্রকে ছাত্রম্। নারীদের- নারীণাম্। নদীতে- নস্যাম্।
আমাকে— মাম্। তোমার দ্বারা ভুয়া। কঃ- কে (পুং), কাদের- কেয়াম্ (পুং), কাসাম (ত্রী)। কে-কা
(ী)।
কর্তা অনুসারে ক্রিয়াপদ গঠিত হয় অর্থাৎ কর্তা যে-পুরুষ ও যে বচনের হয়, ক্রিয়াপদও সেই পুরুষ ও
সেই বচনের হয়। যেমন- বালকটি পড়ে বালকঃ পঠতি। দুজন বালক পড়ে বালকৌ পঠতঃ ।
বালকেরা পড়ে- বালকাঃ পঠন্তি। তুমি পড়- তুম্ পঠসি। তোমরা দুজন পড়— যুবাম্ পঠথঃ। তোমরা
পড়- যূয়ম পঠথ। আমি পড়ি- অহম্ পঠামি। আমরা দুজন পড়ি- আবাম্ পঠাবঃ। আমরা পড়ি- বয়
পঠামঃ ।
বর্তমান কালে ল-এর প্রয়োগ হয়। যেমন- আমি বলি- অহং বদামি। সে বলে সঃ বদতি।
8)
অতীতকালে লঙ্-এর প্রয়োগ হয়। যেমন- তুমি গিয়েছিলে- তুম্ অগচ্ছঃ। আমি পড়েছিলাম- অহম্
অপঠ। শ্রীকৃষ্ণ বললেন- শ্রীকৃষঃ অবদ।
ভবিষ্যৎ কাল অর্থে লুট্-এর প্রয়োগ হয়। যেমন- তারা লিখবে- তে লেখিষ্যন্তি। আমি বলব- অহম
বদিষ্যামি। সে যাবে সঃগমিষ্যতি।
বর্তমান অনুজ্ঞা অর্থাৎ আদেশ, উপদেশ প্রভৃতি বোঝাতে লোট-এর প্রয়োগ হয়। যেমন- পড়- পঠ। যাও-
গচ্ছ। বল বদ দাও দেহি। সেবা কর সেব
দ্রষ্টব্য : বর্তমান অনুজ্ঞায় কর্তা তুম্ (তুমি), যুবা (তোমরা দুজন), যূয়ম্ (তোমরা) সাধারণত উহা
থাকে।
१
উচিত অর্থে বিধিলিঙের প্রয়োগ হয়। বাংলায় ক্রিয়ার পরে 'উচিত' শব্দ থাকলে কর্তায় ষষ্ঠী বিভক্তি
থাকলেও সংস্কৃতে কর্তায় প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- তার যাওয়া উচিত- সঃ গচ্ছে। আমার পড়া
উচিত- অহম্ পঠেয়ম্। তাদের বলা উচিত- তে বদেষুঃ ।
বাক্যে সন্ধি কর্তার ইচ্ছাধীন, যেমন- তুমি পান করছ- তুম্ পিবসি/ ত্বং পিবসি। তোমরা যাচ্ছ- যূয়ম্
পচ্ছা / যূৎ গচ্ছ।
কর্তৃবাচ্যে কর্তায় প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- বালকটি দেখে বালকঃ পশ্যতি। আমি দেখি- অহং
পশ্যামি। তারা দেখে তে পশ্যন্তি ।
১০। কর্তৃবাচ্যে কর্মে ২য়া বিভক্তি হয়। যেমন- বালিকা রামায়ণ পড়ছে- বালিকা রামায়ণ পঠতি। আমি
তাকে জানি- অহ তাং জানামি।
১১। করণে ওয়া বিভক্তি হয়। যেমন- আমরা কলম দ্বারা লিখি- বয়ং লেখন্যা লিখামঃ। সকলেই চক্ষু দ্বারা
দেখে- সর্বে এর চক্ষুষা পশ্যন্তি ।
১২। সম্প্রদানে ৪র্থী বিভক্তি হয়। যেমন- ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও- ভিক্ষুকায় ভিক্ষাং দেহি । ব্ৰাহ্মণ তৃষ্ণার্তকে
জল দান করেন- ব্রাহ্মণঃ তৃষ্ণার্তায় জলং দদাতি।
অপাদানে ৫মী বিভক্তি হয়। যেমন- গাছ থেকে পাতা পড়ে বৃক্ষাৎ পত্রং পততি। মেঘ থেকে বৃষ্টি
হয়— মেঘাৎ বৃষ্টিঃ ভবতি ।
১৪। সম্বন্ধে ষষ্ঠী বিভক্তি হয়। যেমন- আমার গৃহ- মম গৃহম্। তার বই- তস্য পুস্তম। কূপের জল-
কৃপসা জনম্ ।
১৫। অধিকরণে ৭মী হয়। যেমন- জলে মাছ থাকে- ভালে মৎস্যঃ বসতি। বর্ষায় বৃষ্টি হয়- বর্ষাসু বৃষ্টিঃ
ভবতি। বসন্তে কোকিল ডাকে- বসন্তে কোকিলঃ কৃজতি। তিনি ব্যাকরণে নিপুণ স ব্যাকরণে
নিপুণঃ।
১৬। 'নিকষা' শব্দযোগে ষষ্ঠী বিভক্তি না হয়ে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- গ্রামের নিকটে নদী - গ্ৰামং
নিকষা নদী। শহরের নিকট রাস্তা- নগরং নিকষা পাঃ ।
১৭। 'সহ' শব্দযোগে তয়া বিভক্তি হয়। যেমন- পিতা পুত্রের সঙ্গে যাচ্ছেন- পিতা পুত্রেণ সহ গচ্ছতি। রাম
সীতার সঙ্গে যাচ্ছেন- রামঃ সীতয়া সহ গচ্ছতি।
১৮। 'প্রয়োজন' শব্দের যোগে ওয়া বিভক্তি হয়। যেমন- আমার ধনের প্রয়োজন নেই- মম ধনেন প্রয়োজনং
নাস্তি।
১৯। ধিক্, অভিতঃ (সম্মুখে), পরিতঃ (চারদিকে), উভয়তঃ (দুদিকে), প্রতি প্রভৃতি শব্দযোগে দ্বিতীয়া
বিভক্তি হয়। যেমন- ভাগ্যহীন আমাকে ধিক্ ধিক্ মাং ভাগ্যহীনম্। গ্রামের সম্মুখে বাগান -
গ্রামম্ অভিতঃ উদ্যানম্ ।
১৩।
৯।
গ্রামের চারদিকে রাস্তা- গ্রামং পরিতঃ পন্থানঃ। শহরের দুদিকে নদী- নগরম্ উভয়তঃ নদী। দরিদ্রের
প্রতি দয়া কর দরিদ্রং প্রতি দয়াং কুরু।
২০। ব্যাপ্তি অর্থে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- সে একমাস যাবৎ রামায়ণ পড়ছে- স মাসং ব্যাকরণং
পঠতি। আমি এক বছর যাবৎ বেদান্ত পড়ছি- অহং বর্ষং দেবান্তং পঠামি ।
২১। নমস্ ( নমঃ) শব্দযোগে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- শিবকে নমস্কার- শিবায় নমঃ। গুরুকে নমস্কার-
পুরবে নমঃ।
প্রশ্নমালা
শুদ্ধ উত্তরটির পাশে টিক (/) চিহ্ন দাও :
(ক) আমি পড়ি - অহং পঠতি/অহং পঠামি/অহং পঠায়ঃ/ বরং পঠাবঃ।
(খ) তুমি পড় তুম্ পঠতু/তম পঠতি তুম্ পঠসি/তুম্ পঠেৎ ।
-
(গ) গ্রামের সম্মুখে বাগান গ্রাম অভিত উদ্যানম/গ্রামং নিকষা বনম/গ্রামং পরিতঃ কাননম/গ্রামং
যাবৎ বনম্।
ঘ) দরিদ্রের প্রতি দয়া কর দরিদ্রস্য প্রতি দয়াং কুরু / দরিদ্রেণ প্রতি দয়াং কুরু / দরিদ্রায় প্রতি দয়া
কুকু/দরিদ্রং প্রতি দয়াং কুরু ।
সংস্কৃতে অনুবাদ কর :
ক) আমি খাই। (খ) বালকেরা চাঁদ দেখে। (গ) ধান থেকে চাল হয়। (ঘ) তিনি বেদ পড়েছিলেন। (ঙ)
তারা জল পান করবে। (চ) তুমি গীতা পড়ছ। (ছ) তোমার জিজ্ঞেস করা উচিত। (জ) ভিক্ষুককে
ভিক্ষা দাও। (ঝ) নদীতে জল আছে। (ঞ) আমি জল পান করেছিলাম। (ট) তারা চোখ দিয়ে দেখে।
(ঠ) এটি তার বই। (ড) জলে মাছ বাস করে। (ঢ) তিনি একমাস যাবৎ সাহিত্য পড়ছেন। (ণ)
গ্রামের চারদিকে বন। (ত) শহরের দুদিকে নদী। (থ) পাপীকে ধিক্ । (দ) আমি তার সঙ্গে যাব।
(ধ) নারায়ণকে নমস্কার। (ন) গুরুকে প্রণাম করি।
(খ) সংস্কৃত থেকে বাংলা অনুবাদ
বালকঃ চন্দ্রং পশ্যতি- বালকটি চাঁদ দেখছে।
অহং বেদম অপঠম- আমি বেদ পাঠ করেছিলাম।
সর্বে জনাঃ চক্ষুষা পশ্যন্তি সকল লোক চক্ষু দ্বারা দেখে।
বিদ্যালয়ং নিকষা উদ্যানম্ অস্তি বিদ্যালয়ের নিকটে উদ্যান আছে।
পিতরং সেবর্ষ পিতাকে সেবা কর।
ত্বং গচ্ছেঃ- তোমরা যাওয়া উচিত।
তে তীর্থক্ষেত্রং দক্ষ্যন্তি- তারা তীর্থক্ষেত্র দর্শন করবে।
স হস্তেন গৃহাতি ফলম্ - সে হাত দ্বারা ফল গ্রহণ করে।
গগনে চন্দ্ৰঃ উদেতি— আকাশে চাঁদ উঠেছে।
অহং বালিকাং জানামি- আমি বালিকাটিকে জানি।
ভিক্ষুকাং ভিক্ষাং দেহি- ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও।
সন্ন্যাসী মাসং বেদান্তং পঠতি সন্ন্যাসী একমাস যাবৎ বেদান্ত পড়ছেন।
দেব্যৈ নমঃ- দেবীকে নমস্কার।
বিবাদেন অলম্- বিবাদের প্রয়োজন নেই।
গ্রামং পরিতঃ বনানি- গ্রামের চারদিকে বন।
দেবং পূজয়- দেবতাকে পূজা কর ।
নিরন্নং প্রতি দয়াং কুরু- নিরন্নের প্রতি দয়া কর ।
প্রশ্নমালা
সঠিক উত্তরটির পাশে টিক (/) চিহ্ন দাও :
(ক) অহং জলং পাস্যামি- আমি জলপান করব / আমি জলপান করেছিলাম/আমি জলপান
করি আমার জলপান করা উচিত।
(খ) পূজাং কুরু- পূজা করছেন/ পূজা কর/ পূজা করেছিলেন/পূজা করবেন।
(গ) মম ভ্রাতা আমার ভাইয়েরা আমার ভাইকে / আমার ভাইয়ের /আমার ভাই।
(ঘ) গপনে নক্ষত্রাণি শোভন্তে আকাশে চাঁদ উঠছে/আকাশে সূর্য কিরণ দিচ্ছে/আকাশে মেঘ
জমেছে/আকাশে তারকারাজি শোভা পাচ্ছে।
আরও দেখুন...